২০শে মে, ২০২৫ ইং, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২০শে জিলক্বদ, ১৪৪৬ হিজরী

রাজশাহী মহানগর আ.লীগের তৃণমূলের ভরসার ঠিকানা লিটন-ডাবলু

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে জোর কল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। সাংগঠনিক নেতৃত্ব গুণে তৃণমূলের আস্থার ঠিকানায় পরিণত হয়েছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। তৃণমূল থেকে তিলে তিলে নেতৃত্ব দিয়ে আসা ডাবলু সরকার’ই আবার মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আসীন হচ্ছেন এমনটাই মনে করছেন সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে সভাপতি পদে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজশাহী মহানগর সিটি করপোরেশনের মেয়র এ.এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনও একই পদে আবারও বহাল থাকছেন বলেও মনে করছেন নেতাকর্মীরা।মহানগরের নেতারা জানান, একজন ডাবলু সরকার একদিনে তৈরি হয়নি। তৃণমূলে একজন কর্মী হিসাবে রাজনীতি শুরু করে তিনি বিভাগীয় শহর রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। তিনি একজন সফল সংগঠক। বিএনপি-জামায়াত অধ্যুষিত রাজশাহীতে ডাবলু সরকারের মতো তরুণ সাহসী নেতৃত্ব দরকার। তৃণমূল নেতারা তার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। তিনি স্বৈরাচার বিরোধী থেকে শুরু করে বিএনপি-জামায়াত জোট দুঃশাসনের সময় শক্ত হাতে বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিয়েছেণ। তিনি লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নিজের নেতৃত্ব গড়ে তুলেছেন।তারা আরো জানান, ডাবলু সরকার আশির দশকে রাজশাহী নগরীর সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বি.বি. হিন্দু একাডেমি থেকে ছাত্র রাজনীতির হাতেখড়ি। তার পরিবারের সকল সদস্যই এই প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের শিক্ষাজীবন শুরু করেন এবং অন্যান্য সদস্যরাও মহানগরের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। নেতারা আরও জানান, গত ছয় বছরে মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড কমিটিগুলোতে ডাবলু সরকার নিজস্ব একটি বলয় তৈরি করে ফেলেছেন। দিন কিংবা রাত; একেবারে সাধারণ কর্মীরা ডাকলেও তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দিয়ে ছুটে যান, বিপদ-আপদে পাশে দাঁড়ান। তাই তাকে ছাড়া কাউকে আসন্ন সম্মেলনেও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে চিন্তাভাবনা করছেন কাউন্সিলররা।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের নেতারা জানান, প্রায় ছয় বছর পর রাজশাহী মহানগরের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আমরা চাই, তৃণমূলের প্রত্যাশার মতামতের প্রতিফলন ঘটুক। তারা আরো জানান, দীর্ঘ রাজনীতির পথচলার শুরু থেকে ডাবলু সরকার তৎকালীন ছাত্রনেতা নফিকুল ইসলাম সেন্টু, আসাদুজ্জামান আসাদ, চিত্তরঞ্জন দাস, হাবিবুর রহমান বাবুর মতো নেতৃবৃন্দের সান্নিধ্য লাভ করে রাজনীতিতে নিজেকে একজন মুজিব আদর্শের একজন একনিষ্ঠ অনুরাগী ও দেশরত্ম শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত ভ্যানগার্ড হিসেবে স্বাক্ষর রেখেছেন।তিনি জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম. কামারুজ্জামান হেনার সুযোগ্য পুত্র রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম. খায়রুজ্জামান লিটনের নজরে আসেন ডাবলু সরকার। এরপর থেকে তার রাজনিতক জীবনে যোগ হয় ভিন্ন মাত্রা। খায়রুজ্জামান লিটনের অকৃত্রিম স্নেহ-ভালবাসায় ডাবলু সরকার রাজনীতিতে দলের সাধারণ নেতাকর্মীদের মাঝে অল্প সময়ে নিজেকে একজন সফল ছাত্রনেতা হিসেবে তুলে ধরেন। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতির পথচলায় শুরুতে ডাবলু সরকার পরবর্তীতে রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য, রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য, প্রচার সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে তার সাংগঠনিক দায়িত্বের নজির স্থাপন করেন। ছাত্রলীগের রাজনীতি শেষ করে ডাবলু সরকার প্রথমে মহানগর আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হন। ওই সময়ে তিনি রাজশাহী মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক ভীত মজবুত করার লক্ষ্যে তাকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিলে স্বেচ্ছাসেবক লীগকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড় করান।এরপর ২০১৪ সালের ২৫ অক্টোবর রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে নেতা-কর্মী ও কাউন্সিলরদের অকুন্ঠ সমর্থনে সাধারণ সম্পাদক পদে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তার রাজনৈতিক অভিভাবক এ. এইচ. এম খায়রুজ্জামান লিটনের নির্দেশনায় মহানগর আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। একারণে তৃণমূলের কর্মী থেকে শুরু করে রাজশাহীর জনসাধারণের কাছে তরুণ নেতা হিসাবে ইতোমধ্যে আস্থা অর্জন করেছেন তিনি।এদিকে গত ৮ ফেব্রুয়ারি জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় সম্মেলনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করেন রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সভায় হাছান মাহমুদ বলেন, আগামী ১ মার্চ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের ব্যাপারে সবাই একমত হয়েছেন। তিনি বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন ভাই রাজশাহীকে বিএনপি-জামায়াত মুক্ত করে আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিকভাবে সুংগঠিত ও শক্তিশালী করেছেন। এক সময় বিএনপি-জামায়াতের আস্তানা রাজশাহীর এ জনপদ খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে এখন আওয়ামী লীগের দখলে। রাজশাহীতে লিটন ভাইয়ের নেতৃত্ব মেনেই আমরা রাজনীতি করে যেতে চাই। ওই বর্ধিত সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম কামাল হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সভা সঞ্চালনা করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।২০১৪ সালের ২৫ আক্টোরব সম্মেলনে সভাপতি পদে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ডাবলু সরকার নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে নতুন সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কার্যনির্বাহী কমিটিসহ ২১ সদস্যের উপদেষ্টার তালিকা অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠালে কমিটির অনুমোদন দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

Share Button


     এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ